Recent

ভূমি থেকে বেদখল হলে করণীয় (ফৌজদারি আইনের ধারা ১৪৪/১৪৫ অনুযায়ী)

ভূমি থেকে বেদখল হলে করণীয় (ফৌজদারী আইনের ধারা ১৪৪/১৪৫ অনুযায়ী)

আমরা জানি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জমি-জমা সংক্রান্ত সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে, দেওয়ানী আদালতের মোট মামলার মধ্যে প্রায় ৭০-৮০ ভাগ ই জমি জমা সংক্রান্ত। এমনই একটি সমস্যা হচ্ছে, ভূমি  বেদখল হওয়া বা বে-দখল করার পয়তরা করা। ভূমি বেদখল এর ক্ষেত্রে দেওয়ানী আদালতের পাশাপাশি ফৌজদারি আদালতের ও শরণাপন্ন হওয়া যায়। তবে উল্লেখ্য যে, যদি গুরুত্বর শান্তি ভঙ্গের সম্ভাবনা দেখা দেয় তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করে ফৌজদারি আইন এ ব্যবস্থা গ্রহণ করাই শ্রেয়।  আজকে আমরা ভূমি বে-দখল এর ফৌজদারি প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করবো।


ফৌজদারি কার্য বিধির ১৪৪/ ১৪৫ ধারা অনুযায়ী প্রতিকারঃ 

✔ ১৪৪/১৪৫ ধারায় মামলা করতে হবে,  নির্দিষ্ঠ  এলাকার জন্য নিয়োজিত অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। 

✔ অবশ্যই বে-দখল এর ২ মাসের মধ্যেই উক্ত মামলা করতে হবে।

✔ উক্ত মামলা সমুহে মালিকানার বিষয়টি বিবেচিত হবেনা অর্থাৎ, প্রকৃত পক্ষে যিনি দখলে থাকবেন বা দখলে ছিলেন, তিনি উক্ত জমির মালিক না হলেও তার পক্ষেই আদেশ পেতে পারেন। 

☞ ১৪৪ ধারা প্রযোজ্য হবে যখন কোন পক্ষই দখলে থাকেনা অথচ ২ পক্ষই উক্ত জমির দখল এ যেতে চায় এবং নিজদের মধ্যে বিরোধ তৈরী করে এবং মারাত্নক শান্তি ভঙ্গ ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। 

☞ ১৪৫ ধারায় মামলা করতে হবে যদি কোন পক্ষ দখলে থাকেন এবং অপর পক্ষ তা বেদখল করার পয়তারা করিতেছেন বা বে-দখল করিয়াছেন এবং একই সাথে শান্তি ভঙ্গের ন্যায় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন সেক্ষেত্রে ১৪৫ ধারায় মামলা করে বেদখল হতে প্রতিকার পাওয়া যায়। 

✔ ১৪৪/১৪৫ ধারা অনুযায়ী মামলা করে দ্রুত আইনী প্রতিকার পাওয়া গেলেও স্থায়ী সমাধান পাওয়া যায়না। এ প্রতিকারের মেয়াদ কাল মাত্র ২ মাস।  ফৌজদারি কার্য বিধির ধারা ১৪৪ এর উপধারা ৬ এ বলা হয়েছে ,' মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য বা নিরাপত্তার প্রতি বিপদ অথবা দাঙ্গা বা মারপিটের আশংকার ক্ষেত্রে সরকারী গেজেটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি দ্বারা অন্যরুপ আদেশ না দিলে এই ধারা অনুযায়ী প্রদত্ত কোন আদেশ দুই (২) মাসের বেশী বলবৎ থাকিবেনা। 


ধাপঃ 

✔ প্রথমে ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষকে বেদখলের ২ মাসের মধ্যেই নির্দষ্ট আদালতে মামলা দায়ের করিতে হবে ।

✔ অবশ্যই নালিশী সম্পত্তি বা জমির সঠিক স্কেচ ম্যাপ উল্লেখ করতে হবে।

উক্ত মামলা গ্রহণ করে আদালত সন্তষ্ট হলে, 


✔ অভিযুক্ত পক্ষকে কারণ দর্শানোর সুযোগ প্রদান করে সমন বা নোটিশ প্রেরন করিবেন ।

✔ সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ কে, 

শুনানী না হওয়া পর্যন্ত পক্ষদয়কে প্রত্যেকের নিজ নিজ অবস্থানে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নোটিশ প্রদান করা সহ ,আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করিবেন। 

✔ অতঃপর উক্ত তদন্ত প্রতিবেদন ও অন্যান্য কাগজ পত্রাদি পর্যালোচনা করার মাধ্যমে আদালত যদি সন্তষ্ট হন যে, উক্ত জমি বে-দখল করা হয়েছে কিংবা উক্ত জমি কে কেন্দ্র করে মারাত্নক শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কা দেয়া দিয়েছে তাহলে আদালত আসামী পক্ষের বিরুদ্ধে অস্থায়ী ভাবে ২ মাস বা ৬০ দিনের জন্য উক্ত জমিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করিবেন। 


⇨ ভূমি বে-দখলের প্রতিকার দেওয়ানী আইন অনুযায়ী- https://www.mahadimjl.me/2021/09/special-relief-act-1877-section-8-9-42.html

বিশেষ দ্রষ্টব্য ঃএই ওয়েবসাইটের সকল প্রকাশনা শুধুমাত্র শিক্ষা কাজে ব্যবহারের জন্য, তাই উক্ত প্রকাশনা সমুহে কোন প্রকার ভূল-ক্রটি থাকিলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং ভূল সম্পর্কে আমাদের কে জানাবেন, যেন আমরা তা সংশোধন করতে পারি। আমরা সর্বদা বাংলাদেশের সকল আইন কানুন কে যথাযথ সম্মান ও মান্য করি।


আরো পড়তে পারেনঃ 


বাংলাদেশে তালাকের নিয়মঃ https://www.mahadimjl.me/2021/09/divorce.html

দেওয়ানী আইনে মামলা স্থানান্তরঃ https://www.mahadimjl.me/2021/09/transferofsuitr.html